
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ম্যাচে হেসে খেলে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট খুঁইয়ে ৯৩ রান করে কিউইরা। এত মামুলি রানের জবাবে ৬ উইকেটে জিতল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সিরিজের ট্রফি জয় নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।
ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
তবে সফরকারীদের দেয়া এত অল্প রানের জবাবে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই লিটনকে সাজঘরের পথ দেখান কোল ম্যাকঞ্চি। কিউই অফস্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ারে ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের দুর্দান্ত ক্যাচ হন টাইগার ওপেনার। লিটন ১১ বলে ৬ রান করেন। এরপর ২৪ রানের ছোট একটি জুটি গড়ে তোলেন নাইম- সাকিব। এ জুটি বড় হতে পারতো। কিন্তু সাকিব টার্নিং পিচে অদূরদর্শী কাজ করে বসেন। অ্যাজাজ প্যাটেলকে ডাউন দ্য উইকেটে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সাকিব ৮ বলে ৮ রান করেন। দুই বল পর টাইগারদের আরেক ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহিমকে রানের খাতা খোলার আগে বোল্ড করে দেন প্যাটেল। দলীয় ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আগের থেকে ক্রিজে থাকা মোহাম্মদ নাঈমকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তবে তাড়াহুড়ো করে খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২৯ রানে আউট হন নাঈম। কিন্তু উইকেট কামড়ে রানের চাকা সচল রাখেন মাহমুদউল্লাহ। অবশেষে তিনি মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে। মাহমুদউল্লাহ ৪৩ ও আফিফ ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে এদিন শুরু থেকেই কিউইদের বেশ ভুগিয়েছেন টাইগার বোলার নাসুম আহমেদ। তার সঙ্গে বল হাতে চমক দেখিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট নেয়ার পর নিজের চতুর্থ ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন নাসুম। পরপর দুই বলে ফেরান হেনরি নিকোলস ও কলিন গ্র্যান্ডহোমকে। হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল এই স্পিনারের সামনে, তবে নতুন ব্যাটসম্যান টম ব্লান্ডেল লাফিয়ে উঠা বলটি ব্যাট না বাড়িয়েই ছেড়ে দেন। ওই ওভারে কোনো রান না দিয়ে জোড়া শিকার করেন নাসুম। এরপর ১৬তম ওভারে বল করতে এসে দ্বিতীয় বলেই ব্লান্ডেলকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজ। মিডঅনে থাকা নাঈম শেখের দারুণ ক্যাচে ১০ বলে ৪ রান করেন ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। একই ওভারের শেষ বলে কোল ম্যাককনচিকে ফেরান মোস্তাফিজ। ওই ওভারেই শেষ বলে কোল ম্যাকঞ্চিকে রানের খাতা খোলার আগে ক্যাচ বানিয়েছেন কাটার মাস্টার। এরপর উইল ইয়ং একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন। তবে ৪৮ বলে ৪৬ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে মোস্তাফিজের শিকার হয়েছেন এই ব্যাটসম্যান।
এছাড়া ইনিংসের প্রথম ওভারেই নিউজিল্যান্ডের ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে আউট করেন টাইগার বোলার নাসুম আহমেদ। তার বলে শর্ট ফাইন লেগ থেকে দারুণ ক্যাচ ধরেন সাইফউদ্দিন। ফলে রানের খাতা খোলার আগেই রবীন্দ্র সাজঘরে ফিরেন। এরপর এক ওভার না যেতেই ফের নাসুম আঘাত করেন কিউই শিবীরে। তিনি এবার আউট করেন ফিন অ্যালেনকে। নাসুমের লেন্থ বলে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে পয়েন্টে ক্যাচ লুফে নেন সাইফউদ্দিন। সাজঘরে ফেরার আগে ফিন অ্যালেনকে ৮ বলে ১২ রান করেন। টাইগারদের পক্ষে বল হাতে নাসুম ৪ উইকেট শিকার করেন। মোস্তাফিজও নেন ৪ উইকেট।
এভাবেই অপেক্ষাটা দীর্ঘ হতে দেয়নি বাংলাদেশ দল, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে চতুর্থ টি২০ ম্যাচেই।