আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শীর্ষ তিন নেতা টেলিফোনালাপে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তারের পাশাপাশি আফগানিস্তান নিয়েও গুরুত্বের সাথে আলোচনা করেন।
চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা বিস্তারকে ইরানের সরকার সবসময়ই অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। আফগানিস্তানে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইরান চীনের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছেন বলে জানান প্রেসিডেন্ট রাইসি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীন, রাশিয়া ও ইরাকের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্টের আলোচনায় ইরানের নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতিতে অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়গুলো বিশেষ করে প্রতিবেশী ও এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহৎ দেশগুলোর ব্যাপারে তেহরানের অবস্থান ফুটে উঠেছে।
বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান, রাশিয়া ও চীন সমগ্র এ অঞ্চলের প্রভাবশালী তিনটি দেশ যাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। প্রতিনিয়তও এই তিন দেশ বিশ্বব্যাপী মার্কিন একাধিপত্য ও মোড়লিপনাসূলভ আচরণের বিরোধী। মার্কিন স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ড এ অঞ্চলসহ সারা বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে আছে।
এ অবস্থায় ইরান, চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদার হলে তা বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ইরানের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশ্লেষক হানিফ গাফফারি ইরান, রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বিষয়ে এই তিন দেশই অভিন্ন নীতি পোষণ করে এবং আফগানিস্তানসহ সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে মার্কিন নীতির তীব্র বিরোধী’।
আফগানিস্তানের বর্তমান ঘটনাবলী প্রতিবেশী সব দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা দেশটির জনগণের বহু দিনের দাবি। তাই ইরান, চীন ও রাশিয়া সম্মিলিতভাবে এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের টেলিফোনালাপে এ বিষয়টি ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে।
অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, একদিকে সিরিয়ায় আইএস জঙ্গি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরান ও রাশিয়ার গঠনমূলক সহযোগিতা অন্যদিকে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইরান ও চীনের যৌথ সহযোগিতা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই তিন দেশের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে বলে ।