তালেবান আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর বিভিন্ন দেশের নাগরিক এবং আফগানিস্তানের স্থানীয় লোকজনও দেশ ছাড়তে শুরু করেছে। ফ্লাইট না থাকার কারনে অনেকেই আটকা পড়েছেন। শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত সাত বাংলাদেশি প্রকৌশলী এখন কাবুলে আটকা পড়েছেন। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, অন্তত ২৭ জন বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন আফগানিস্তানের তিনটি শহরে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছেন, আফগানিস্তানের বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশের বেশ কিছু নাগরিক আটকা পড়েছেন। তাঁদের নিরাপদে দেশে ফেরানোর জন্য চেষ্টা চলছে।
আফগানিস্তানে বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো দূতাবাস নেই। উজবেকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাস সমদূরবর্তী মিশন হিসেবে আফগানিস্তানে কাজ করে থাকে। উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে ২৭ জন বাংলাদেশির আটকে পড়ার খবর জেনেছি। তাঁদের মধ্যে কাবুলে আছেন ১৮ জন। ওই ১৮ জনের মধ্যে আফগান ওয়্যারলেসে কর্মরত ৭ প্রকৌশলী, জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের ২ কর্মকর্তা, ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের ৬ কর্মকর্তা, আফগান সুয়ারেজে কর্মরত ২ জন ও কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া ১ বাংলাদেশি রয়েছেন।
পাকিস্তান সীমান্তবর্তী জালালাবাদ শহরে রয়েছেন তাবলিগ জামাতের ৬ জন কর্মী এবং মাজার-ই-শরিফে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১ বাংলাদেশি রয়েছেন। বাকি ২ বাংলাদেশি তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কারাগার থেকে বেরিয়ে পড়েন। তবে তাঁদের সবশেষ অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জার্মান কোম্পানিতে কর্মরত দুই বাংলাদেশি উজবেকিস্তানের দূতাবাসে যোগাযোগ করে জানান, জার্মান সরকার একটি বিশেষ বিমান পাঠাচ্ছে, যা তাসখন্দ হয়ে অন্য দেশে যাবে। যদি উজবেক সরকার ওই বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়, তবে তাঁরা ওই প্লেনে ভ্রমণ করতে পারবেন। তিনি বলেন, উজবেকিস্তানের ডেপুটি ফরেন মিনিস্টারকে বাংলাদেশের নাগরিকদের ট্রানজিট ভিসার অনুরোধ জানালে দেশটি রাজি হয়েছে। এর মধ্যেই জার্মান প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দুই বাংলাদেশির জন্য উজবেকিস্তানের ভিসা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশিরা উজবেকিস্তান হয়ে দেশে ফিরতে চাইলে কোনো ভিসা জটিলতায় পড়বেন না।
এদিকে কাবুলে অবস্থানরত বিদেশিরা এরই মধ্যে তাঁদের দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। ফলে বাকি যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। বিশেষ করে, সেখানকার নিরাপত্তা নিয়েও তাঁরা উদ্বিগ্ন।