আফগানিস্তানের মানুষকে তালেবান হুমকির মধ্যে ফেলে রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। দেশে ছাড়ার পর তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, রক্তপাত এড়াতে তার হাতে আর কোনো ‘বিকল্প ছিল না’। তিনি কোথায় রয়েছেন, তা জানা যায়নি। তবে তার উজবেকিস্তানে আশ্রয় নেওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে – ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গতকাল রোববার সকালে প্রায় বিনা প্রতিরোধে রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করে তালেবান বাহিনী। এরপর ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ বিষয়ে তালেবানের সমঝোতার আলোচনার মধ্যেই বিকেলে জ্যেষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে তাজিকিস্তানের উদ্দেশে রওনা হন গনি। পরে গতকাল রাতেই এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘সংঘাত এড়ানোর জন্যই’ তিনি কাবুল ছেড়েছেন, কারণ লাখো মানুষ সেখানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। রয়টার্স এর সূত্র মতে, দেশ ছাড়ার পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে এটাই তার প্রথম বক্তব্য।
তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের সব প্রবেশ পথ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আফগান সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি শুরু করার পর আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তার মিরজাকওয়াল বলেছিলেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তারা।
কিন্তু পরে প্রেসিডেন্ট গনির দেশত্যাগের খবর এলে তালেবান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন কোনো সরকার আফগানিস্তানে হবে না। তালেবান সরাসরি দেশের ক্ষমতা বুঝে নেবে।
অন্যদিকে, তালেবান বাহিনী কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলেও এ উগ্র ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর তরফ থেকে জানানো হয়। বিবিসি জানিয়েছে,আফগান ও তালেবানদের মধ্যে সমঝোতায় এটা ঠিক হয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট প্রসাদেই ক্ষমতা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা হবে এবং প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি নিজে সেখানে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে তিনি কাবুল ত্যাগ করার পর প্রেসিডেন্ট প্রসাদের কর্মীদের সবাইকে সরে যেতে বলা হয়। কর্মীরা তখন প্রাসাদ খালি করে চলে যান।
এদিকে, তালেবানের সঙ্গে সরকারের শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতার জন্য যে ‘হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল রিকনসিলেশন’ গঠন করা হয়েছিল, তার চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আশরাফ গনি এখন ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট’, যিনি দেশকে এমন অবস্থায় রেখে পালিয়ে গেছেন।