পদ্মা সেতুর খুঁটিতে ধাক্কা লাগলেই ‘বরখাস্ত

%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE %E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B0 %E0%A6%96%E0%A7%81%E0%A6%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87 %E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE %E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%87 %E2%80%98%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4

ছবি: সংগৃহীত

২৫ দিনের মধ্যে চারবার পদ্মা সেতুর খুঁটির (পাইল ক্যাপ) সাথে ফেরির ধাক্কা লেগেছে। প্রতিবারই তাৎক্ষণিক ফেরির চালক ও হুইল সুকানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথের ফেরির চালকদের মধ্যে ভয় তৈরি হয়েছে। চালকরা বলছেন, নদীর প্রবল স্রোতের কারনে ফেরি নিয়ন্ত্রণ রাখা যাচ্ছে না। এছাড়া পুরনো এসব ফেরির ব্যাপক কারিগরি সমস্যাও রয়েছে। তবু দুর্ঘটনায় কেন তাঁদের বরখাস্ত করা হবে।

 

গত ২০ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত চারবার পদ্মা সেতুর খুঁটিতে ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৬ ও ১৭ নম্বর খুঁটিতে একবার এবং ১০ নম্বর খুঁটিতে দুইবার করে ধাক্কা লাগে। সর্বশেষ গত শুক্রবার ১০ নম্বর  খুঁটিতে ধাক্কা দেওয়া কাকলি ফেরির চালক বাদল হোসেন কে ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের পর চালক বাদল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ফেরিটির যান্ত্রিক জটিলতা ছিল। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়টি  আগেই জানিয়েছিলেন। এমনকি তিনি এই ফেরি চালাতে প্রথমে রাজি পর্যন্ত ছিলেন না। তবু তাঁকে ফেরি চালাতে বলা হয়। অথচ দুর্ঘটনার পর সবার আগে তাকেই দায়ী করা হচ্ছে।

 

এমন পরিস্থিতিতে চালকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমতাবস্থায় ফেরি চালাতে চালকরা অনীহা প্রকাশ করছেন । নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চালক বলেন, পদ্মায় বর্তমানে যে গতিতে স্রোত বইছে, তাতে এমনিতেই ফেরিগুলো টেনে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইঞ্জিনের গতির তুলনায় স্রোতের গতি বেশি হওয়ায় ফেরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। স্রোতের অনুকূলে চলতে থাকলে সেতুর কাছ দিয়ে যাবার সময় ফেরির গতি আর ঠিক রাখা যায় না। ফেরিকে প্রবল স্রোত টেনে নিয়ে যায় পিলারের কাছে। এতে পিলারের সঙ্গে ফেরির ধাক্কা লেগে যায়। আমাদের কিছুই আর করার থাকে না। কিন্তু দোষটা পড়ছে আমাদের ঘাড়ে। সাময়িক বরখাস্ত করছে। কেন বরখাস্ত করা হবে আমাদের?

 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিহন সংস্থার (বিআইডাব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম গতকাল শনিবার (১৪আগস্ট) শিমুলিয়া ঘাটে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘চালক ও স্টাফদের মধ্যে ক্ষোভ থাকাটাই স্বাভাবিক। ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে ভারী যানবাহনকে অন্য রুট ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

 

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে স্বাভাবিক সময়ে ১৫টি ফেরি চলাচল করলেও গতকাল তিন-চারটি ফেরি চলাচল করেছে। সব কটিই ছিল মাঝারি আকারের। পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে। চার দিন অপেক্ষা করেও ঘাট পার হতে পারেনি এমন যানের সংখ্যাও কম নয়। তবে যাত্রীবাহী গাড়িগুলোকে ঘাট পারাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

 

এই পথে ভারী যান পারাপার বন্ধ থাকায় অন্য দিকে পণ্যবাহী গাড়ির ব্যাপক চাপ বেড়েছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে। তবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে যাত্রীবাহী গাড়ির সংখ্যা স্বাভাবিক রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *