লেবানিজ রেফারি ম্যাচ শুরুর বাঁশিতে ফুঁ দিতেই শুরু হয় যুদ্ধ। বুনো ষাঁড়ের গতিতে পায়ে বল নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যান ফুটবলাররা। লাল জার্সির বসুন্ধরা কিংস ও হলুদ জার্সির মাজিয়া। দুই দলকে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করতে দেখে দর্শকদের অভাব পুষিয়ে দেন স্টাফরা। ফুটবলারদের উৎসাহ দিয়ে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামকে সরগরম করে তোলেন তারা। শোরগোল আরও বেড়ে যায় বসুন্ধরা কিংস গোল করার পর। মালদ্বীপের রাজধানী মালের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ফুটবলীয় উত্তাপে ভরপুর ম্যাচটা অস্কার ব্রুজোনের দল জয় করে ২-০ ব্যবধানে।
দুই দলই ম্যাচের ২৫তম মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। রবসন রবিনহো, রাউল বেসেরা আর ফার্নান্দেজদের অব্যাহত আক্রমণ সামলাতে না পেরে মাজিয়ার ইরুফান ব্যাক পাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সামনে এগিয়ে আসা মাজিয়ার উজবেক গোলরক্ষক মামাতখানভ পিছিয়ে গোলবার রক্ষা করতে পারেননি। এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। এখানেই শেষ নয়। প্রথমার্ধ্বেই ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় অস্কার ব্রুজোনের দল। ম্যাচের ৪০তম মিনিটে মাজিয়ার ডি বক্সে বল পান রবসন রবিনহো। শট নিতে গেলে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার এসে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে মাজিয়ার ডিফেন্ডারের পায়ে বল লেগে ফিরে আসে রবসনের কাছে। এক পাক ঘুরে বেশ কিছুটা জায়গা নিয়ে আরও একটু এগিয়ে রবসন গোলরক্ষক ও গোলবারের সরু ফাঁক গলিয়ে বল জালে জড়ান। বসুন্ধরা কিংস এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। এরপর প্রথমার্ধ্বেই আরও দুটি দারুণ সুযোগ পান রবসন ও ফার্নান্দেজ।
দ্বিতীয়ার্ধ্বেও আধিপত্য ধরে রাখে বসুন্ধরা কিংস। মাজিয়া কয়েকবার আক্রমণে গেলেও সেগুলো রুখে দেন খালেদ শাফি, তপু বর্মণ, তারিক কাজী আর বিশ্বনাথ ঘোষরা। আনিসুর রহমান জিকো গোলবারের সামনে ছিলেন অতন্দ্র প্রহরীর মতোই। ম্যাচের শেষদিকে দারুণ কয়েকটা সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি ফার্নান্দেজ আর রাউল বেসেরা। তবে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রসদ প্রথমার্ধ্বেই জুগিয়ে নিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস।
প্রথম ম্যাচ জিতেই এএফসি কাপে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের মিশন শুরু করল বসুন্ধরা কিংস। অবশ্য পরের দুই ম্যাচেও জয় প্রয়োজন অস্কার ব্রুজোনের দলের। গতকাল অপর ম্যাচে জয় পেয়েছে ভারতীয় ক্লাব এটিকে মোহনবাগান। তারা ২-০ গোলে হারিয়েছে স্বদেশি ক্লাব বেঙ্গালুরুকে। এর ফলে জটিল হিসাব বসুন্ধরা কিংসের সামনে। শনিবার দ্বিতীয় ম্যাচে তারা বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে জয় পেলেই হবে না। এটিকে মোহনবাগানের বিপক্ষে ২৪ আগস্টের ম্যাচেও জিততে হবে। অবশ্য পরের ম্যাচে মোহনবাগান মালদ্বীপের ক্লাব মাজিয়ার কাছে পরাজিত হলে বসুন্ধরার কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে ড্র করলেই চলবে অস্কার ব্রুজোনের দলের।