কোরবানির সময় অদক্ষ লোকজন কোনও নিয়ম ও কানুন না মেনে ইচ্ছামতো কোরবারির পশুর চামড়া ছাড়ানোর কাজ করে থাকেন। এর ফলে অনেক চামড়া ত্রুটিপূর্ণ হয়ে যায়। তবে সতর্কতার সাথে কিছু পদ্ধতি মেনে সহজেই কোরবানির পশুর চামড়া ছাড়ানো সম্ভব। জেনে নেয়া যাক-
১. কোরবানির আগের রাত থেকে দানাদার খাবার (খড়, ভুসি, ঘাস) দেয়া বন্ধ রাখতে হবে। তবে কোরবানির দিন সকালে পশুকে পর্যাপ্ত পরিষ্কার পানি পান করাতে হবে। এতে জবাইয়ের পর চামড়া ছাড়ানো সহজ হয়। কোরবানির দিন ভোরে পশুকে ভালোভাবে গোসল করাতে হবে। শরীরের ময়লা পরিষ্কার করে দিতে হবে।
২. পশু কোরবানির স্থান হিসেবে সমতল জায়গা বেছে নেয়া উচিত। কংক্রিটের মেঝে অথবা এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় গরু জবাইয়ের ব্যবস্থা করা ঠিক নয়। কারণ এতে গরু আহত হতে পারে এবং চামড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পাড়া বা মহল্লার সব কোরবানির পশুকে এক জায়গা অথবা এক মাঠে কোরবানি করা যেতে পারে। কোরবানির সময় পশুর যেন কষ্ট না হয় সে জন্য জবাইয়ের সময় অত্যন্ত ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু চামড়া ছাড়ানোর জন্য ব্যবহার্য ছুরি অপেক্ষাকৃত কম ধারালো হতে হবে কারণ ধার বেশি হলে চামড়া কেটে যেতে পারে।
৩. কোরবানির জন্য শোয়ানো অবস্থায় পশুটিকে যেন টানাহিঁচড়া না করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জবাইয়ের পর পশুর শরীর থেকে চলমান রক্ত বের হয়ে যাওয়া পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। পশুর দেহের প্রাণস্পন্দন একেবারে থেমে যাওয়ার পর চামড়া ছাড়ানো শুরু করতে হবে।
৪. কোরবানির পশুকে শিরদাঁড়ার ওপর চিৎ করে শুইয়ে দুই পাশে ঠেস দিতে হবে। এরপর ছুরির মাথা দিয়ে গলার জবাই করার স্থান থেকে গলা, সিনা ও পেটের ওপর দিয়ে মলদ্বার পর্যন্ত সোজাভাবে হালকা করে কাটতে হবে। সামনের দুই পায়ের গোড়ার কাটা থেকে পায়ের ভিতর অংশ দিয়ে সোজা চামড়া ফাড়া দিয়ে ঊরু ফলকের ওপর দিয়ে কেটে বুকের লম্বা কাটার সঙ্গে সংযোগ করতে হবে। পেছনের দুই পায়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে চামড়া কাটতে হবে।
তারপরে পায়ের গোড়া থেকে সম্পূর্ণ পা এবং পেটের চামড়ার কিছু অংশ ছাড়িয়ে নিতে হবে।
পরে চার পা এবং নাড়িভুঁড়ি ছাড়াতে হবে। ছাগল ও ভেড়ার চামড়া ছাড়ানোর সময় যদি উঁচুতে কোনো কিছুর সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া যায় তাহলে চামড়া ছাড়ানো সহজ ও সুবিধাজনক হবে। ছাগল ও ভেড়ার চামড়া ছাড়ানোর সময় ছুরি ব্যবহার না করে কাঠ বা পিতলের মুণ্ডু অথবা হাতের মুঠি দিয়ে ঠেসে ঠেসে মাংস হতে চামড়া আলাদা করা যায়।